সফলতার গল্প ১০

আরেকটি পরিতৃপ্তির কাজঃ
মেয়েটি ডাক্তার, ওর প্রথম বাচ্চার জন্ম সিজারিয়ান ডেলিভারীর মাধ্যমে। পাঁচ বছর পর আবার কনসিভ করে। এবার প্রথম থেকেই আমার চেকআপে ছিলো। কিন্তু এবার আল্ট্রাসনোগ্রামে ধরা পরলো প্ল্যাসেন্টা প্রিভিয়া (গর্ভফুল নিচে জরায়ুমুখের কাছাকাছি থাকলে তাকে বলা হয় Placenta Praevia বা Low lying placenta) যা জরায়ু মুখের সাথে লাগানো ছিলো। এটি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ একটা অবস্থা যেখানে প্রচুর রক্তপাত হয় এবং সেই রক্তপাত বন্ধ করা খুব কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। অনেক সময় বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সত্বেও রক্তপাত বন্ধ না হলে জরায়ু ফেলে দিতে হয়, এতোটাই ঝুঁকি থাকে ফুল নিচে থাকলে। চার জন রক্তদাতার ব্যবস্থা করা ছিলো আগে থেকেই। বাচ্চা ডেলিভারীর পর প্রচুর রক্তপাত হতে শুরু করলো। খুব সাবধানে আমরা placental bed এর ব্লিডিং বন্ধ করলাম, Uterine artery ও ligate করলাম। ব্লিডিং অনেক কমে গেলো, আলহামদুলিল্লাহ। এরপর আবিষ্কার করলাম, ওর জরায়ুর পেছনে নিচের দিকে ছোট ছোট তিনটা টিউমার (ফাইব্রয়েড) আছে যেগুলো প্রেগন্যান্সিতে আল্ট্রাসনোগ্রামে ধরা পরেনি। টিউমার তিনটিও ফেলে দিলাম। ডাক্তার মেয়েটি ও তার পুত্রসন্তান দুজনই ভালো আছে💚💚, আলহামদুলিল্লাহ।
রক্তপাত বন্ধ করতে পারাতে আমাদের পুরো সার্জারী টীম স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। এনেস্থেটিস্টসহ সার্জারী টীমের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দরভাবে আমাকে এই কঠিন সার্জারীতে সাহায্য করার জন্য আর পরম করুণাময় মহান আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা আমাকে জ্ঞান, দক্ষতা, ধৈর্যধারণসহ সব দিক থেকে সাহায্য করার জন্য। আলহামদুলিল্লাহ!!
ডাঃ শিরিন জাহান
বন্ধ্যাত্ব, প্রসূতি, গাইনী ও প্রজনন হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ
কনসালটেন্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *